বিশ্বতত্ত্ব বিষয়ক মতবাদের মতোই এনাক্সিমেন্ডার জীবের উৎপত্তি সম্পর্কেও এক চিওাকর্ষক মতবাদ উপস্থাপন করেছেন। তাঁর মতে সমুদ্র থেকেই জীবের উৎপত্তি হয়েছে। বর্তমানে পৃথিবীর বুকে যে সব প্রাণী দেখা যায় নতুন পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানের ফলেই তারা বর্তমান রুপ ধারণ করেছে। আদিতে পৃথিবী ছিল তরল প্রকৃতির। বাষ্পীভবনের ফলে এই তরল উপাদান শুষ্ক হতে থাকে এবং তাপ ও আর্দ্রতার ফলে জীবের উৎপত্তি হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এই জীব ছিল অতিক্ষুদ্র আকৃতির। ক্রুমিক বিবর্তনের ফলে তাদের আকারের পরিবর্তন ঘটে এবং পরিবেশের সঙ্গে খাপখাইয়ে চলার মতো প্রয়োজনীয় অঙ্গপ্রতঙ্গে গজাতে থাকে। ক্রমিক শুষ্ককরণের ফলে পৃথিবীর অংশ বিশেষ উঁচু এবং শুষ্ক স্থল ভাগে পরিণত হয় এবং কোনো কোনো জীব বসবাসের জন্য স্থলভাগে চলে আসে। ক্রমিক অভিযোজনের (adaptation) ফলে এই সকল প্রাণীর পানিতে বসবাসের উপযোগী অঙ্গপ্রতঙ্গ সমূহ স্থলভাগে বসবাওে উপযোগী অঙ্গপ্রত্যঙ্গে পরিণত হয়। মানুষের উৎপত্তি সম্পর্কেও এনাক্সিমেন্ডার তাঁর মতবাদ উপস্থপন করেছেন। তাঁর মতে মৎস্য বা অন্য কোনো প্রজাতির জীব থেকে মানুষের জন্ম হয়ে থাকতে পারে। তিনি যুক্তি দেখান যে, অন্যান্য প্রাণী জন্মগ্রহণের পর অতি দ্রুত নিজেদেও আহার খুঁজে নিতে পারলেও মানুষকে দীর্ঘদিন মাতৃস্তন্যের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। এনাক্সিমেন্ডারের মতে এর অর্থ দাঁড়ায় মানুষ বর্তমানে যে অবস্থায় আছে আদিতে তা থাকলে তারা টিকে থাকতে পারতো না। তাঁর মতে আদিতে মাছের উদওে মানুষের উদ্ভব ঘটে। দীর্ঘদিন হাঙ্গরের মতো লালিতপালিত হওয়ার পর (হাঙ্গরের গর্বধারণ কাল স্তন্যপায়ীদেও গর্ভধারণ কালের অনুরুপ) আত্মরক্ষায় উপর্যুক্ত হলে তারা সমুদ্রতীরে উঠে আসে এবং ডাঙ্গায় বসতি স্থাপন করে। সুতরাং এনাক্সিমেন্ডারের জীব সৃষ্টি সম্পর্কিত মতবাদের মধ্যে আধুনিক বিবর্তনবাদের ইঙ্গিত লক্ষ করা যায়।