নবী মুহাম্মদ কি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন?

ছোটবেলা মায়ের মুখে খুব অসাধারণ মানবিক একটি গল্প শুনতাম। গল্পটি মহানবী হযরত মুহাম্মদ আর একজন ইহুদি বুড়িকে নিয়ে। এক ইহুদি বুড়ি রোজ মহানবীর নামাজে যাবার পথে কাঁটা বিছিয়ে রাখতো, মহানবী নামাজে সিজদা করার সময় পিঠে উটের নাড়িভুঁড়ি চাপিয়ে দিতো, নানান অত্যাচার করতো, অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করতো। কিন্তু মানবদরদী মহাবিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব আমাদের নবীজি সেই ইহুদি বুড়িকে কিছুই বলতেন না। মুখ বুজে সব অত্যাচার সহ্য করে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতেন, যেন সেই ইহুদি বুড়িকে আল্লাহ সঠিক পথ দেখান।


একদিন মহানবী দেখলেন, তার রাস্তায় কাঁটা নেই। কেউ তাকে গালি দিচ্ছে না, কেউ তার পিঠে উট কিংবা ভেড়ার নাড়িভুড়ি চাপিয়ে দিচ্ছে না। তিনি তো হতবাক! নামাজ বাদ দিয়েই দৌড়ে গেলেন বুড়ির বাসায়। গিয়ে দেখেন বুড়ি অসুস্থ। এরপরে মানবতাবাদী মহানবী বুড়ির সেবা শুশ্রূষা করলেন, প্রেম আর ভালবাসা দিয়ে তাকে সুস্থ করে তুললেন। মহানবীর এই মানবপ্রেম দেখে ইহুদি বুড়ি তার ভুল বুঝতে পারলো এবং লজ্জিত হলো। তিনি পরে ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং দ্বীনের সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করলেন।

গল্পটি অসাধারণ। ছোটবেলা যখন গল্পটা শুনতাম, তখন আবেগে চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে যেতো। আহা, আমাদের মহানবী কত ভালমানুষই না ছিলেন। ধর্ম বর্ণ সবাইকে সমান ভালবাসতেন। এরকম মানুষই তো পৃথিবীর জন্য দরকার। ছোটবেলা তাই মহানবীকে খুব ভালবাসতাম। আমার মা এরকম আরো নানান গল্প বলতেন মহানবীকে নিয়ে। শুনতাম আর মুগ্ধ হয়ে ভাবতাম, আমিও মহানবীর মত মানবদরদী হবো। আমাকেও কেউ গালাগালি করলে, বা কটাক্ষ করলে, এমনকি মারলেও, আমি তাকে ভালবাসা দিয়ে উত্তর দেবো। কোনদিন তাদের হত্যা করবো না। গুনগুন করে এই গানটি গাইতাম,

নবী মোর পরশ মনি, নবী মোর সোনার খনি, নবী নাম জপে যে জন, সেইতো দোজাহানের ধনী

একটু বড় হবার পরে এই গল্পটা আরো বিস্তারিতভাবে জানার জন্য কোরআন পড়তে শুরু করলাম। স্বাভাবিকভাবেই ধারণা ছিল কোরআন হাদিস এই ধরণের ঐতিহাসিক সত্য ইতিহাসে পরিপূর্ণ থাকবে। কিন্তু কোরআন হাদিসগুলো সব তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম। কোথাও এরকম কিছু খুঁজে পেলাম না। আমি খুব খুশি হতাম যদি আসলেই ঘটনাগুলো এরকম হতো। মহানবী হযরত মুহাম্মদকে আমি ছোটবেলা যেরকম জানতাম, সেভাবে পেলেই নিজের কাছে খুব ভাল লাগতো।

মহানবী নিজের বাপদাদার ধর্ম ত্যাগ করেছিলেন। তাতেই থামেন নি, উনি রীতিমত সেইসব ধর্মের সমালোচনাও করতেন। স্বাভাবিকভাবেই, কাফের পৌত্তলিকগণ এতে ক্ষিপ্ত হয়েছিল। এখনো কোন মুসলিম তার ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু হয়ে গেলে, বা নাস্তিক হয়ে গেলে, তার জীবন বাঁচানো মুশকিল হয়ে যায়। মহানবীর সাথেও নিশ্চয়ই এমন আচরণ হয়েছিল। মহানবী মুহাম্মদ তাদের সাথে পাল্টা আচরণ কেমন করেছিলেন? প্রেম আর ভালবাসা দিয়ে তাদের জয় করেছিলেন? নাকি তাদের খুন করিয়েছেন?

কোরআন, হাদিস, এবং অন্যান্য ইসলামি ইতিহাসে মহানবী আসলে তার সমালোচকদের, তাকে কটাক্ষকারীদের সাথে কী আচরণ করেছিলেন, তা খুঁজে দেখা তাই আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে, হাদিস গ্রন্থগুলো ঘেঁটে একেবারেই ভিন্ন এক মুহাম্মদকে আবিষ্কার করলাম! সেই ভিন্ন এক মুহাম্মদের কথাই এখানে উল্লেখ করছি।আশাকরি পাঠক মন দিয়ে পুরোটুকু পড়বেন।

বন্ধু নির্বাচনে আমি ভীষণ রকম সচেতন থাকি সবসময়। একজন মানুষের সাথে বন্ধুত্ব মানে তার সাথে কথা বলা, বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানো, সুখ দুঃখের বিষয়গুলো শেয়ার করা। তাই খুব সচেতনভাবে এমন বন্ধু আমি নির্বাচন করি না, যাদের সাথে আমার মন মানসিকতার মিল নেই। যখন আমি কোন মানুষের সাথে পরিচিত হই, তিনি কেমন মানুষ তা বিবেচনা করার জন্য আমি প্রথমেই তিনটি বিষয় বিবেচনায় রাখি-

  • উনি ধর্মীয়ভাবে সাম্প্রদায়িক কিনা। ভিন্ন ধর্মের মানুষদের ঘৃণা করেন কিনা।
  • নারী, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের প্রতি উনার দৃষ্টিভঙ্গি কেমন। উনি নারীদের পুরুষদের চাইতে নিচু স্তরের মানুষ মনে করেন কিনা।
  • দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ যেমন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, আদিবাসী, অবাঙালিদের প্রতি উনার দৃষ্টিভঙ্গি কেমন।

এই তিনটি বিষয় বিবেচনার পরে আমি সাধারণত তার সম্পর্কে সিদ্ধান্তে আসি যে, উনি ভাল মানুষ অথবা খারাপ মানুষ। এরকম মানুষের সাথে মেশা, বন্ধুত্ব করা বা এরকম মানুষের সাথে আমার আলাপ করা ঠিক হবে কিনা, তা বেশিরভাগ সময়ই এই তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। তবে এখানেই বিষয়টি শেষ হয়ে যায় না। এরপরেও আমি দেখি, উনি দুর্নীতিবাজ কিনা, উনি দুর্বলের ওপরে অত্যাচার করেন কিনা, বিশেষ করে বাসার কাজের ছেলেমেয়েদের সাথে উনার আচরণ কেমন। এগুলোর একটাও যদি আমি নেগেটিভ দেখি, সেই মানুষের সাথে আমার আর বন্ধুত্ব টেকে না। আমি ধীরে ধীরে তাকে এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করি। তার সাথে সম্পর্ক আর রাখতে ইচ্ছুক থাকি না। তবে শুধু যে এই কয়েকটি বিষয়ই বিবেচনা করি, তাই নয়। বিবেচনা করি আরও অনেকগুলো বিষয়।

এই যে মানুষকে বিচার বিশ্লেষণ, এটা অত্যন্ত জরুরি বলেই আমার মনে হয়। এমনকি, আমার ভাই বোন আত্মীয়স্বজনদের মধ্যেও যদি এরকম স্বভাবের কাউকে আমি খুঁজে পাই, তার বা তাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে, বা আড্ডা দিতে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। বন্ধু বা কাছের মানুষ কিংবা প্রয়োজন হিসেবে বিবেচনা করতে এই বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতেই হয়। নতুবা আমি নিজের কাছেই নিজে ছোট হয়ে যাবো। কিন্তু পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে কাউকে বিবেচনা করতে হলে নিশ্চয়ই আরো অনেকগুলো বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আরো অনেক বিশ্লেষণের দরকার হবে। কারণ এর সাথে জড়িত আছে সাধারণ মানুষের অনুসরণ করার প্রবণতা। ভুল মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে স্থান দেয়া হলে সাধারণ মানুষ না বুঝেই তাকে অনুসরণ করতে চাইবে। যার কারণে তারাও সেই মানুষের বৈশিষ্ট্যগুলো ধারণ করবে।

নবী মুহাম্মদ নাকি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন। একজন ভাল মানুষের মধ্যে আমরা কী কী গুণাবলী প্রত্যাশা করি? তিনি কাউকে খুন করবেন না, কাউকে ধর্ষণ করবেন না, কারোর সম্পদ লুট করবেন না, কাউকে জোরজবরদস্তি করে কোন কাজে বাধ্য করবে না, সাম্প্রদায়িক চিন্তাভাবনা পোষণ করবে না, নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবেন এবং তাদের সমতা বিষয়ে সচেতন থাকবেন, সংখ্যালঘু বা অন্য ধর্মের মানুষকে সমমর্যাদার মানুষ হিসেবে গণ্য করবেন, এইসব। এইসব গুণাবলীর কথা বিচার বিবেচনা করলে, নবী মুহাম্মদকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ তো দূরের কথা, নিজের পক্ষে একজন ভাল মানুষও কি বলা সম্ভব?

নবী নিজেকে ভালবাসতে নির্দেশ দিয়ে গেছেন

ইসলাম ধর্মের নবী মুহাম্মদ তার উম্মতদের নির্দেশ দিয়ে গেছেন, তাকে ভালবাসতে। একজন প্রকৃত মুমিনের কাছে তার পিতামাতার চাইতেও নবী বেশি প্রিয় হতেই হবে। নইলে সে মুমিনই নয়। নবীকে ভালবাসতে হবে, এই কথাটি যদি নবী নিজে ছাড়া অন্য কেউ বলতো, তাহলে আপত্তি ছিল না। কিন্তু খোদ নবী নিজেই তাকে ভালবাসতে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন, বিষয়টি অত্যন্ত হাস্যকর। ঠিক যেমন সিনেমার জেনারেল আলাদিন, কিংবা কোন সামরিক শাসক তার অনুসারীদের তাকে ভালবাসতে ও শ্রদ্ধা করতে বাধ্য করতো। গলায় চাপাতি ধরে ভালবাসা আদায় রীতিমত। একটা বাঙলা সিনেমা ছিল, ভালবাসা দিবি কিনা বল!

সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ২/ ঈমান (বিশ্বাস)
পরিচ্ছেদঃ ২/৮. আল্লাহ্‌র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ভালোবাসা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত।
১৪. আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সেই আল্লাহর শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ প্রকৃত মু‘মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার নিকট তার পিতা ও সন্তানাদির চেয়ে অধিক ভালবাসার পাত্র হই। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

নিজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকতেন

নবী মুহাম্মদ নিজেই নিজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকতেন। তার সাহাবীদের বলতেন, তিনি নিজেই হচ্ছেন সবচাইতে সেরা।

সূনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
অধ্যায়ঃ ৪৬/ রাসূলুল্লাহ ﷺ ও তার সাহাবীগণের মর্যাদা
পরিচ্ছেদঃ ৬৪. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণের মর্যাদা
৩৮৯৫। আয়িশাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মাঝে সে-ই ভাল যে তার পরিবারের নিকট ভাল। আর আমি আমার পরিবারের নিকট তোমাদের চাইতে উত্তম। আর তোমাদের কোন সঙ্গী মৃত্যুবরণ করলে তার সমালোচনা পরিত্যাগ করো।
সহীহঃ সহীহাহ (২৮৫)।
আবূ ঈসা বলেন, সাওরীর হাদীস হিসেবে এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ। খুব কম সংখ্যক লোকই এটি সাওরী হতে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি হিশাম ইবনু উরওয়াহ-তার পিতা হতে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এই সনদে মুরসালরূপেও বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)
Narrated ‘Aishah: that the Messenger of Allah (ﷺ) said: “The best of you is the best to his wives, and I am the best of you to my wives, and when your companion dies, leave him alone.”

কিন্তু সত্য হচ্ছে, দাসী সহবত নিয়ে স্ত্রীদের সাথে তার ঝগড়ার ফলাফল স্বরূপ, তিনি আল্লাহর আয়াত নামিয়ে স্ত্রীদের হুমকি দিতেন তালাক দেয়ারঃ

যদি নবী তোমাদের সকলকে পরিত্যাগ করেন, তবে সম্ভবতঃ তাঁর পালনকর্তা তাঁকে পরিবর্তে দিবেন তোমাদের চাইতে উত্তম স্ত্রী, যারা হবে আজ্ঞাবহ, ঈমানদার, নামাযী তওবাকারিণী, এবাদতকারিণী, রোযাদার, অকুমারী ও কুমারী।

দরূদ না পড়লে অভিশাপ দিতেন নবী

নবী মুহাম্মদের প্রতি যে দরূদ পড়বে না, মুহাম্মদ তাদেরকে অভিশাপ দিয়েছেন এবং তাদের ক্ষতি কামনা করতেন।

রিয়াযুস স্বা-লিহীন
অধ্যায়ঃ ১৫/ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর দরূদ ও সালাম প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদঃ ২৪৩: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ করার আদেশ, তার মাহাত্ম্য ও শব্দাবলী
৪/১৪০৮। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই অভিশাপ দিলেন যে, “সেই ব্যক্তির নাক ধূলা-ধূসরিত হোক, যার কাছে আমার নাম উল্লেখ করা হল, অথচ সে (আমার নাম শুনেও) আমার প্রতি দরূদ পড়ল না।” (অর্থাৎ ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম’ বলল না।) (তিরমিযী হাসান) (1)
(1) তিরমিযী ৩৫৪৫, আহমাদ ৭৪০২
হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)

 

স্ববিরোধী কাজ করতেন নবী

আলীকে দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দিয়েছিলেন নবী

হযরত মুহাম্মদ নিজে অনেকগুলো বিবাহ করেছেন, দাসীদের সাথেও সহবত করেছেন। এবং প্রায়শই বিবি দাসী এদের নিয়ে রীতিমত ঝগড়াঝাঁটি হয়ে গেছে, যা সামাল দিতে আল্লাহপাকের হুমকিধামকি সহ আয়াত পর্যন্ত নাজিল করতে হয়েছে। নবী মুহাম্মদ অল্পবয়সী শিশু স্ত্রী আয়শাকে বেশি ভালবাসতেন যেটি সর্বজনবিদিত। মজার কথা হচ্ছে, নিজে এতগুলো বিয়ে করলেও, নিজের মেয়ের জামাইকে কিন্তু তিনি আর কোন বিয়ে করতে দেন নি। সেখানে তিনি জাতে মাতাল তালে ঠিক। বাপ তো! কীভাবে মেয়ের জন্য সতীন আনার অনুমতি দেন! কিন্তু তিনি যাদের বিয়ে করেছেন, তারাও যে কারো না কারো কন্যা ছিল, এই কথাটি উনি ভুলেই গেছেন। তারাও যে সতীন ঘরে আসলে কষ্ট পেতো, সেটি তিনি ভাবেন নি।

সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৪/ বিয়ে-শাদী
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৩. কন্যার মধ্যে ঈর্ষা সৃষ্টি হওয়া থেকে বাধা প্রদান এবং ইনসাফমূলক কথা
৪৮৫০। কুতায়বা (রহঃ) … মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মিম্বরে বসে বলতে শুনেছি যে, বনি হিশাম ইবনু মুগীরা, আলী ইবনু আবূ তালিবের কাছে তাদের মেয়ে শাদী দেবার জন্য আমার কাছে অনুমতি চেয়েছে; কিন্তু আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আলী ইবনু আবূ তালিব আমার কন্যাকে তালাক দেয় এবং এর পরেই সে তাদের মেয়েকে শাদী করতে পারে। কেননা, ফাতেমা হচ্ছে আমার কলিজার টুকরা এবং সে যা ঘৃণা করে, আমিও তা ঘৃণা করি এবং তাকে যা কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

ক্রীতদাসী বা যৌনদাসী সঙ্গমে সওয়াব

অনেকেই বলতে পারেন, ক্রীতদাসীদের সাথে যৌনকর্মের কথা ইসলামে রয়েছে তবে কাজটি বাধ্যতামূলক নয়। কেউ চাইলে করতে পারে, নাও করতে পারে। কিন্তু দাসীর সাথে যৌনকর্ম কী আসলেই একটি ঐচ্ছিক বিষয়? নাকি এই কাজে রীতিমত উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে? আসুন হাদিস থেকেই জেনে নিই, দাসী ভোগ ইসলামে পবিত্র কাজ বা সওয়াব বলে বিবেচিত হয় কিনা। নিজের হাদিস থেকে এটি পরিষ্কার যে, নবী দাসী সেক্স করার উৎসাহ দিয়েছেন এবং এটি একটি রীতিমত সওয়াবের কাজ।

মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ – সদাক্বার মর্যাদা
১৮৯৮-[১১] আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক ‘তাসবীহ’ অর্থাৎ সুবহা-নাল্ল-হ বলা সদাক্বাহ্ (সাদাকা), প্রত্যেক ‘তাকবীর’ অর্থাৎ আল্ল-হু আকবার বলা সদাক্বাহ্ (সাদাকা), প্রত্যেক ‘তাহমীদ’ বা আলহাম্‌দুলিল্লা-হ বলা সদাক্বাহ্ (সাদাকা)। প্রত্যেক ‘তাহলীল’ বা ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলা সদাক্বাহ্ (সাদাকা)। নেককাজের নির্দেশ দেয়া, খারাপ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখা সদাক্বাহ্ (সাদাকা)। নিজের স্ত্রী অথবা দাসীর সাথে সহবাস করাও সদাক্বাহ্ (সাদাকা)। সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ যদি নিজের কামভাব চরিতার্থ করে তাতেও কি সে সাওয়াব পাবে? উত্তরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমাকে বলো, কোন ব্যক্তি যদি হারাম উপায়ে কামভাব চরিতার্থ করে তাহলে সেকি গুনাহগার হবে না? ঠিক এভাবেই হালাল উপায়ে (স্ত্রী অথবা দাসীর সাথে) কামভাব চরিতার্থকারী সাওয়াব পাবে। (মুসলিম)[1]
[1] সহীহ : মুসলিম ১০০৬, আহমাদ ২১৪৮২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৭৮২৩, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ৪৫৪, সহীহ আত্ তারগীব ১৫৫৬, সহীহ আল জামি‘ আস্ সগীর ২৫৮৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

গোটা সম্প্রদায়কে অভিশাপ দিতেন নবী

দুর্ভিক্ষ একটি ভয়াহব ব্যাপার। একজন সভ্য মানুষ হিসেবে আমি আমার চরম শত্রুকেও দুর্ভিক্ষের অভিশাপ দিতে পারি না। কারণ কোন অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ হলে সেখানে দলে দলে শিশুরা মারা যায়, নারী এবং বৃদ্ধরা মারা যায়, প্রতিবন্ধীরা মারা যায়। এমনকি, কেউ চিহ্নিত অপরাধী হয়ে থাকলেও, দুর্ভিক্ষে না খেতে পেয়ে কেউ তিলে তিলে মারা যাক, এমনটাও আমি কখনো কামনা করি না। কিন্তু নবী দুর্ভিক্ষের অভিশাপ দিতেন, যেই দুর্ভিক্ষে শিশু নারী প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ সকলে মারা যেতে পারে!

সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ১৫/ বৃষ্টির জন্য দু’আ
পরিচ্ছেদঃ ৬৩৬. নবী (ﷺ) এর দু’আ ইউসুফ (আঃ) এর যমানার দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর মত (এদের উপরেও) কয়েক বছর দুর্ভিক্ষ দিন।
৯৫২। কুতাইবা ইবনু সায়ীদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন শেষ রাকাআত থেকে মাথা উঠালেন, তখন বললেন, হে আল্লাহ! আইয়্যাশ ইবনু আবূ রাবী’আহকে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! সালামা ইবনু হিশামকে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদকে রক্ষা করুণ। হে আল্লাহ! দুর্বল মু’মিনদেরকে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! মুযার গোত্রের উপর আপনার শাস্তি কঠোর করে দিন। হে আল্লাহ! ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর যমানার দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর ন্যায় (এদের উপর) কয়েক বছর দুর্ভিক্ষ দিন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বললেন, গিফার গোত্র, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করুন। আর আসলাম গোত্র, আল্লাহ তাদেরকে নিরাপদে রাখুন। ইবনু আবূ যিনাদ (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বলেন, এ সমস্ত দু’আ ফজরের সালাতে ছিল।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)

Post a Comment

0 Comments